আলয়ইন্দ্রিয়

ইন্দ্রিয়

ইন্দ্রিয়/ [ইন্দ্র (আত্না, স্বয়ং) + ইর। আত্না যার উপর প্রভুত্ব করে। অতি প্রাচীন বাংলা ‘ইদি’, ‘ইদী’, ‘ইন্দি’, ‘ইন্দিঅ’, ‘ইন্দীঅ’। — বৌদ্ধগান ও দোহা। ইদিবিসঅ = ইন্দ্রিয় বিষয়ক (চর্যাপদ ৪১.৩)। ইন্দিআল = ইন্দ্রিয়জাল (চর্যাপদ ৩০৩)। ইন্দীজানী (সংস্কৃত ইন্দ্রিয়াণী চর্যাপদ ৩৩/৪)। ‘ইন্দীঅ-বিষয়-গাম’ (‘ইন্দ্রিয় বিষয়- গ্রাম।’—টীকা)— বৌদ্ধগান ও দোহা] বিশেষ্য, যদ্ধারা পদার্থের জ্ঞান জন্মে। ইন্দ্রিয় তিন প্রকার— (১) কর্মেন্দ্রিয়বাক্, পাণি, পাদ, পায়ূ, উপস্থ। (২) জ্ঞানেন্দ্রিয়-চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক্ (৩) অন্তরিন্দ্রিয়-মন, বুদ্ধি, অহঙ্কার, চিত্ত [বেদান্তে] এই ১৪ ইন্দ্রিয়ের ১৪ দেবতা কল্পিত হয়ে—চক্ষুর সূর্য, কর্ণের দিক্, নাসিকার অশ্বিনীকুমারদ্বয়, জিহ্বার প্রচেতা, ত্বকের বায়ু, মনের চন্দ্র, বুদ্ধির চতুর্মুখ, অহঙ্কারের শঙ্কর, চিত্তের অচ্যুত, বাক্যের বহ্নি, পাণির ইন্দ্র, পাদের বিষ্ণু, পায়ুর মিত্র, উপস্থের প্রজাপতি [ন্যায়মতে] পৃথিবীর ইন্দ্রিয় ঘ্রাণ, জলের জিহ্বা, তেজের চক্ষু, বায়ুর ত্বক্ ও আকাশের কর্ণ]। ইন্দ্রিয় বি. যেসমস্ত দেহযন্ত্র বা শক্তির সাহায্যে বাহ্য বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞান ও বিভিন্ন ক্রিয়া সম্পাদনে সামর্থ্য জন্মে-ইন্দ্রিয় চোদ্দোটি। বাক্ পাণি পাদ পায়ু উপস্থ: এই পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয়; চক্ষু কর্ণ নাসা জিহ্বা ত্বক: এই পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়; এবং মন বুদ্ধি অহংকার চিত্ত: এই চারটি অন্তরিন্দ্রিয়। [সং. ইন্দ্র + ঈয় (ঘ)]।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ

শব্দসূত্র