ইতিহাস/ [ইতিহ (পরস্পরাগত উপদেশ) + অস্ (হওয়া) + অ (বি)—যাতে পরস্পরাগত উপদেশ আছে] বিশেষ্য, পূর্ববৃত্তান্ত; পুরাবৃত্ত; প্রাচীন কথা; ইতিবৃত্ত history; অতীতের কাহিনী; যা হয়ে গিয়েছে তার যথাযথ চিত্র। ‘যাতে ধর্ম্মার্থকামমোক্ষের উপদেশ-সহ পূর্ব বৃত্তান্ত বর্ণিত আছে।’ —মহাভারত। ‘ইতিহাসের কথা-বস্তু, ‘পূর্ববৃত্ত-কথা।’ ধর্ম্মার্থকামমোক্ষের যে পূর্ববৃত্ত কথা, অথবা যে পূর্ববৃত্ত কথাযুক্ত ধর্ম্মার্থকামমোক্ষের উপদেশ-সমন্বিত বিষয়, তাহারই নাম ‘ইতিহাস’ বলিয়া সুপরিচিত ছিল। তাহা সত্যঘটনামূলক পুরা-কাহিনীর আধার। পুরাণে ঠিক এইরূপ ধরা বাঁধা সত্যঘটনামূলক কথার উপর ধর্ম্মার্থকামমোক্ষের উপদেশ নির্ভর করে না। পুরাণ ‘পঞ্চ লক্ষণ’ গন্থ বলিয়া পরিচিত। * * * ‘পঞ্চলক্ষণ’ পুরাণে থাকিত—সর্গ, প্রতিসর্গ, বংশ, মন্বন্তর, বংশানুচরিত ইত্যাদির কথা। সে কথা জনশ্রুতিমূলক চিরপ্রচলিত পুরাতন কথা হইলেও, ‘পূর্ববৃত্তৃকথা’ বলিয়া পরিচিত ছিল না। এইখানে পুরাণের এবং ইতিহাসের পার্থক্য থাকায় এবং উভয়ের মধ্যে লোকশিক্ষার উপাদান তুল্যভাবে নিহিত থাকায়, অতি পুরাকাল হতে দুইটি বিধয়কেই পৃথক্ ভাবে অধ্যয়ন করিবার ব্যবস্থা প্রচলিত হইয়াছিল।’—অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় (মানসী ও মর্ম্মবাণী, ফাল্গুন, ১৩৩৪)। ‘যিনি অসংখ্য লোকের শ্রদ্ধা ও ভক্তি আকর্ষণ করিয়া তাহাদের আদর্শ বা মূর্ত্তিরূপে বিরাজমান, তাঁহার চরিত্রকথা যাহাতে বিবৃত আছে তাহাই ইতিহাস, ইতিহাসের ভিত্তি ব্যক্তিবিশেষের জীবনী * * *।’ ‘অতীত ঘটনার ফলাফল দর্শনে, বর্তমানকে কিরূপ ভাবে আয়ত্ত করিলে ভবিষ্যতে সুফল লাভ হয়, ইতিহাস তাহাই নির্দ্দেশ করে।’ —ইমার্সন্। ইতিহাস বি. অতীত বৃত্তান্ত, বর্তমান সময়ের আগে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার বৃত্তান্ত। [সং. ইতিহ + √ অস্ + অ]।